ডেস্ক রিপোর্ট •
উত্তরাধিকারসূত্রে প্রাপ্ত জমি বুঝে না পাওয়ায় শাশুড়ির লাশ দাফনে বাধা দিয়েছে পুত্রবধূ। প্রথমে মৌখিকভাবে বাধা দিলেও পরে শাশুড়ির লাশ দাফনের জন্য খোঁড়া কবরে শুয়ে পড়েন তিনি।
জানা যায়, খবর পেয়ে কবরে শুয়ে পড়া পুত্রবধূকে পুলিশ হেফাজতে নিয়ে মৃত শাশুড়ির মরদেহ দাফন করা হয়।
সোমবার (১৭ জুলাই) বরিশালের বাবুগঞ্জের লোহালিয়া গ্রামে ঘটেছে এ ঘটনা। এ ঘটনার একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে। এ নিয়ে বেশ আলোচনা-সমালোচনা চলছে।
ছড়িয়ে পড়া ভিডিওতে দেখা যায়, আনুমানিক ৪৫ বছর বয়সী এক নারী কবরে নেমে শুয়ে পড়ছেন। গ্রামবাসী নারীকে কবর থেকে ওঠানোর চেষ্টা করছে। কবরের আশপাশে গ্রামবাসীর সঙ্গে পুলিশ সদস্যরাও রয়েছেন। সেখানে জড়ো হওয়া গ্রামবাসীরা বলছে, আপন শাশুড়ি। এমন কাজ কি কেউ করে? তখন একজন তাকে বলছে, আপনি কাগজে না পাইলে কি করবেন। আপনি কি কবরে শুয়ে জায়গা (জমি) নেবেন। আপনি না পেলে কেমনে নেবেন। একপর্যায়ে কবরে শুয়ে পড়া নারীকে ক্ষোভে চাপা দেওয়ার কথা বলেছেন কেউ কেউ।
জানা গেছে, লোহালিয়া গ্রামের মৃত মোবারক আলী খানের স্ত্রী আনোয়ারা বেগম (৮০) সোমবার মৃত্যুবরণ করেন। তার পাঁচ কন্যা ও একমাত্র ছেলে আব্দুর রহিম। রহিম সৌদি প্রবাসী। আব্দুর রহিমের স্ত্রী শাহনাজ বেগমের (৪৫) সঙ্গে তার পাঁচ ননদের জমি ভাগাভাগি নিয়ে বিরোধ চলে আসছিল। মৃত্যুর আগে শাশুড়িকে সেই বিরোধ সমাধান করে যেতে বলেছিলেন। সমাধানের আগেই মারা যান আনোয়ারা বেগম। তবে আনোয়ারা বেগমকে যে স্থানে দাফন করা হবে তা ওসিয়ত (নির্দেশ) করে যান তিনি।
সোমবার ওসিয়ত (নির্দেশ) অনুসারে আনোয়ারা বেগমকে দাফনের জন্য কবর খোঁড়া হলে সেই জমি নিজের দাবি করে কবরে শুয়ে পড়েন তার পুত্রবধূ শাহনাজ। পরে তাকে পুলিশ হেফজেতে নিয়ে দাফন শেষ করা হয়।
বাবুগঞ্জ থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) তুষার কান্তি মন্ডল জানান, দাফনে বাধা দেওয়ার ঘটনায় ওই নারীকে পুলিশ হেফাজতে নেওয়া হয়েছিল। পরে মুচলেকা নিয়ে তার ভাইয়ের জিম্মায় ছেড়ে দেওয়া হয়েছে।
রহমতপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মৃধা মো. আক্তারুজ্জামান মিলন বলেন, জমি নিয়ে বিরোধের জেরে এ ঘটনা ঘটেছে। পরে পুলিশ এসে ওই নারীকে তাদের হেফাজতে নেয়। তার শাশুড়ির দাফন সম্পন্ন করা হয়েছে।
প্রতিদিনের খবরগুলো আপনার ফেসবুক টাইমলাইনে পেতে নিচের লাইক অপশনে ক্লিক করুন-